বঙ্গভূমি লাইভ ডেস্ক: বাংলা নাট্যজগতে নক্ষত্রপতন। চলে গেলেন নাট্যব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্র। রবিবার বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জীবনাবসান হল তাঁর। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। ইতিমধ্যেই সকলের অন্তরালে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। শাঁওলি ছিলেন প্রবাদপ্রতিম শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রের কন্যা। শাওলির প্রয়াণের সঙ্গে শেষ হল, বাংলা নাটকে শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রের অনন্য ঘরানা। শাঁওলি মিত্র শুধু বাংলা নয়, সারা দেশের শিল্পমহলে একটি বিশিষ্ট নাম।
জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই অসুস্থ ছিলেন পঞ্চম বৈদিকের কর্ণধার। রবিবার থেমে গেল অনন্য এক অভিনেত্রীর জীবনপথের পরিক্রমা।সকলের অগোচরে একেবারে নীরবে বিদায় নিলেন তিনি। মৃত্যুর আগে একটি ইচ্ছেপত্র লিখেছিলেন শাঁওলি ৷ যাতে ছিল বাবা শম্ভু মিত্রের আদর্শের প্রতিফলন। বাবার মতোই তিনি চাননি, মৃত্যুর পর মরদেহ নিয়ে অহেতুক বাড়াবাড়ি হোক। একজন সাধারণ মানুষের মতোই বিদায় নিতে চাওয়ার ইচ্ছে থেকেই তাঁর এই ইচ্ছেপত্র। তাঁর শেষ ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়েই প্রয়াণের খবর জানানো হয়নি অনুরাগীদের৷ এ দিন দুপুরে সিরিটি মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। শেষ ইচ্ছাপত্রে তিনি জানিয়ে গিয়েছিলেন, দাহকার্যের পর তাঁর মৃত্যুর খবর যেন জানানো হয় সবাইকে। তাঁর শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যকর্মী এবং রাজনীতিবিদ অর্পিতা ঘোষ। প্রয়াত নাট্যব্যক্তিত্ব শেষ ইচ্ছাপত্রে তাঁর মানস-পুত্র এবং কন্যা সায়ক চক্রবর্তী এবং অর্পিতা ঘোষের উপরেই তাঁর দাহকার্যের ভার দিয়ে গিয়েছিলেন।
তাঁর প্রতিটি অভিনয়ই দর্শককে মোহাবিষ্ট করত। তবে নাথবতী অনাথবৎ শাঁওলির অভিনয়, তাঁকে এক অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। তাঁর অন্যান্য মঞ্চখ্যাত নাটকগুলি হল, বিতত বিতংশ, পুতুলখেলা, একটি রাজনৈতিক হত্যা, কথা অমৃতসমান, পাগলা ঘোড়া, গ্যালিলিও’র জীবন।
ঋত্বিক ঘটকের ছবি ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ ছবিতে অভিনয় করেন শাঁওলি মিত্র। ২০০৩ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান তিনি। ২০০৯ সালে পদ্মশ্রী পান তিনি। ২০১২ সালে অভিনয়ে আজীবন অবদানের জন্য ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মানে ভূষিত হন তিনি।
Leave a Reply