বঙ্গভূমি লাইভ ডেস্ক: মহাত্মা গান্ধির উদ্দেশে তিনি যদি অবমাননাকর কিছু বলেও থাকেন,তার জন্য আদৌ অনুতপ্ত নন। এমনকী নিজের বক্তব্য নিয়ে কোনও অনুশোচনাও নেই, কারণ তিনি জাতির জনককে বিশেষ কোনও সম্মান দেখাতে রাজি নন। এক ভিডিও বার্তায় এভাবেই নিজের অবস্থানে অনড় থাকলেন স্বঘোষিত ধর্মগুরু কালীচরণ মহারাজ। গান্ধিজির হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে ‘মহাত্মা’ বলে অতি সম্প্রতি বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছেন কালীচরণ মহারাজ। প্রকাশ্য ধর্মসভায় মহাত্মা গান্ধিকে নানাভাবে অপমান ও অসম্মানের অভিযোগের নিরিখে মহারাষ্ট্র এবং ছত্তিশগড়ে এই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এরপরই তিনি সাফ জানিয়েছেন, এহেন মন্তব্যের জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী নন। এই মন্তব্যের কারণে তাঁকে ফাঁসিতে চড়ানো হলেও, তা মাথা পেতে নেবেন। রায়পুরের এসএসপি প্রশান্ত আগরওয়ালও কালীচরণ মহারাজের দেওয়া ভিডিও বার্তার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সব অভিযোগের তদন্তে নেমেছে পুলিস, শুরু হয়েছে গ্রেপ্তারির প্রক্রিয়াও।
বিতর্কের সূত্রপাত ছত্তিশগড়ে আয়োজিত এক ধর্মীয় সভায়। মহাত্মা গান্ধির হত্যার প্রসঙ্গ তুলে,নাথুরাম গডসের স্তূতি উঠে আসে কালীচরণ মহারাজের তাঁর গলায়। আর এই মন্তব্যের জেরেই স্বঘোষিত ধর্মগুরু বিতর্কের জড়িয়ে যান।
রবিবারের ওই সভায় শুধু গডসেকে মহান করাই নয়, গান্ধিকে অপমান করতে গিয়ে টেনে আনা হয় সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকেও। কালীচরণ মহারাজের অভিযোগ ছিল,‘স্বাধীনতার পর সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলকে প্রধানমন্ত্রী করা হলে, আজ ভারত আমেরিকার থেকেও শক্তিশালি রাষ্ট্রে পরিণত হত।কিন্তু গান্ধিজিই তা চাননি। গান্ধি শুধু চেয়েছিলেন স্বাধীন ভারতে নেহরু-গান্ধি সাম্রাজ্য চালাতে।’ এমনকী এও বলেন, হিন্দু ধর্মের রক্ষায়, দেশবাসীর উচিত একজন কট্টর হিন্দুত্ববাদীকে নেতা নির্বাচন করা। এইভাবে ধর্মীয় উস্কানির পরই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে রায়পুরের প্রাক্তন মেয়র তথা কংগ্রেস নেতা প্রমোদ দুবে এফআইআর দায়ের করেন। পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের অকোলায় কালীচরণ মহারাজের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের হয়।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রের অকোলারই বাসিন্দা কালীচরণ মহারাজ। মহারাষ্ট্রের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী নবাব মালিক এই ধর্মগুরুকে ‘ফর্জিবাবা’ অর্থাৎ ভুয়ো ধর্মগুরু আখ্যা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন।
কালীচরণ মহারাজের পিতৃদত্ত নাম অভিজিৎ ধনঞ্জয় সারাং। অভিজিতের ধীরে ধীরে কালীচরণ হয়ে ওঠার নেপথ্যে রয়েছে তাঁর ধর্মাসক্তি। ইন্দোরের এক ধর্মগুরুর সান্নিধ্যে এসে তিনি নিজেকে ধর্মের পথে ঠেলে দেন বলে জানা যাচ্ছে।
Leave a Reply