বঙ্গভূমি লাইভ ডেস্ক: গুরু নানকের জন্মদিনে গোটা দেশকে চমকে দিয়ে, বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সাফল্য পায় কৃষকদের দীর্ঘ আন্দোলন। তবে এই সিদ্ধান্তকে একেবারেই মানতে পারেননি কঙ্গনা। অভিনেত্রী ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছেন, ‘দুঃখজনক, লজ্জাজনক ও সম্পূর্ণ অন্যায়। সংসদে নির্বাচিত সরকারের পরিবর্তে যদি রাস্তায় বসে থাকা লোকেরাই আইন বানাতে শুরু করে, তাহলে মানতেই হবে এটা একটা জেহাদি দেশ।’ এরপরই কটাক্ষ করে তিনি লেখেন, ‘তাঁদের সকলকে অভিনন্দন যাঁরা এটা চেয়েছিলেন।’
এখানেই শেষ নয়, খলিস্তানিদের তুলোধোনা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো বোমা ফাটিয়েছিলেন। তুলে এনেছিলেন ১৯৮৪-র অপারেশন ব্লু স্টার প্রসঙ্গও। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কৃষকদের এই প্রতিবাদকে খলিস্তানি আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করতেও ছাড়েননি তিনি। দু’দিন আগেই, নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে, কঙ্গনা সমগ্র শিখ সম্প্রদায়কে খলিস্তানি জঙ্গিদের সঙ্গে তুলনা করেন এবং ইন্দিরা গান্ধির নাম না নিয়ে বলেন, মহিলা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তাদের ‘মশার মতো’ জুতোর তলায় পিষে মেরে ছিলেন। কঙ্গনার পোস্টের পরই ফুঁসে ওঠে গোটা শিখ সমাজ। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিসে অভিযোগ দায়ের করেছেন দিল্লি শিখ গুরুদ্বার পরিচালন কমিটির সভাপতি এবং অকালি নেতা মনজিন্দর সিং সির্সা৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় সমগ্র শিখ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষমূলক’ এবং ‘অবমাননাকর’ পোস্ট করার জন্যই অভিযোগটি দায়ের হয় ৷
এবার মুম্বইয়ের শিখ সম্প্রদায়ভুক্ত অমরজিৎ সান্ধু নামে এক ব্যবসায়ী কঙ্গনার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন। সাবারবন খার থানায় দায়ের অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছে দিল্লি শিখ গুরুদ্বার পরিচালন কমিটি এবং শিরোমনি অকালি দলও। অমরজিতের প্রধান অভিযোগ, শিখদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন কঙ্গনা।
অমরজিতের অভিযোগে, কঙ্গনার আগের দিনের পোস্টের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়।যেখানে লেখা ছিল, ‘খলিস্তানি জঙ্গিরা আজ ফের মাথা তুলতে শুরু করেছে। কিন্তু একজন মহিলাকে ভুলে গেলে চলবে না। তিনি একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী… জিস নে ইনকো আপনি জুতি কে নিচে কুচল দিয়া থা। তার জন্য এই দেশকে কতখানি অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে, সেটা বড় কথা নয়, কিন্তু নিজের জীবনের বিনিময়ে ওদের মশার মতো মেরেছিলেন।’ কঙ্গনা আরও লেখেন, ‘এক যুগ পরেও তাঁর নামে কাঁপে ওরা। সেই ভয় কাটাতে ওঁদের একজন গুরুর প্রয়োজন।’ অমরজিতের দাবি, এভাবে শিখদের অপমান করা হয়েছে। পুলিস যেন তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করে।
কঙ্গনার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫এ ধারায়, ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত ও অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ আনা হয়েছে। দিল্লি শিখ গুরুদ্বার পরিচালন কমিটির সভাপতি এবং অকালি নেতা মনজিন্দর সিং সির্সার নেতৃত্বে এক শিখ প্রতিনিধিদল মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ ওয়ালসে পাটিলের সঙ্গে দেখা করে কঙ্গনার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানায়।
Leave a Reply