বঙ্গভূমি লাইভ ডেস্ক: মৃত্যুর পর আরেকজনের কাজে লাগুক তাঁর নশ্বর দেহ, চেয়েছিলেন ইছাপুরের নিপা! কিন্তু পরপারে চলে যাওয়া মানুষটির শেষ ইচ্ছায় বাদ সাধল হাসপাতাল।অঙ্গীকার করা সত্ত্বেও মৃত্যুর পর দেহ দান করা গেল না নিপা মারিকের। কারণ?
পেটে টিউমার নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরের বাসিন্দা ৪৬ বছরের নিপা মারিক।সোমবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে মৃত্যু হয় নিপার। তাঁর পরিবারের লোকেরা দেহ নিয়ে আসেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। অভিযোগ, অঙ্গীকার থাকা সত্ত্বেও ইছাপুরের বাসিন্দা নিপা মারিকের মরদেহ দান করা সম্ভব হয়নি। নিপার পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগ তাদের জানায় স্থানাভাব রয়েছে। মরদেহ গ্রহণ করা সম্ভব নয়।
এরপর মরণোত্তর দেহদান আন্দোলনের অগ্রনী সংস্থা গণদর্পণ-এর উদ্যোগে ন্যাশানল মেডিক্যাল কলেজে নিপার দেহ দান করার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেখান থেকেও ফিরতে হয়।গণদর্পণ-এর সম্পাদক শ্যামল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দেহ রাখা হয়েছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। মঙ্গলবার ন্যাশনল মেডিক্যাল কলেজে নিপার দেহ আনার পর দেখা যায় যে নিপা মারিকের কোনও কোভিড টেস্ট নেই। এখন নিয়ম অনুযায়ী কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া মরদেহ দান করা সম্ভব নয়।
এই মুহূর্তে যে কোনও অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হলে কোভিড টেস্ট বাধ্যতামূলক। প্রশ্ন উঠছে, এত দিনে নিপাদেবীর কোভিড টেস্ট হয়নি কেন? এর কোনও উত্তর দিতে পারেননি সহকারী সুপার ডাক্তার শিল্পী ঘটক। শ্যামল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দেহদানের অঙ্গীকার এখনও বহুল প্রচলিত নয়। অথচ একজন সচেতন নাগরিক যখন দেহ দান করলেন, তা নেওয়া গেল না। এইধরণের ঘটনা মরণোত্তর দেহদান আন্দোলনকে ব্যহত করবে বলে তাঁর মত।
করোনা পরিস্থিতিতে বড়সড় প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে মরণোত্তর দেহদান। চিকিৎসক থেকে শুরু করে দেহদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ব্যাক্তিরা জানিয়েছেন, করোনাকালে সার্বিক পরিস্থিতি এতটাই বিমুখ যে, সামাজিক সচেতনতার বশে নেওয়া পদক্ষেপ পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। যার মধ্যে একটি মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার। আপাতত ওমিক্রনের দাপটে অপূর্ণ রয়ে গেল নিপার শেষ ইচ্ছে।মৃতা মেয়ের দেহদান করতে চেয়েও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ঘাড়ধাক্কা খেতে হল নিপা মারিকের পরিবারকে।
Leave a Reply