বঙ্গভূমি লাইভ ডেস্ক: পঞ্জাব বিধানসভা ভোটের এর দিনবদল। নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিল পূর্ব ঘোষণা মতো ১৪ ফেব্রুয়ারি পঞ্জাবের বিধানসভা ভোট হচ্ছে না। রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির আবেদন মেনেই পিছিয়ে দেওয়া হল এই নির্বাচন। ভোটগ্রহণ হবে ২০ ফেব্রুয়ারি। ভোট পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে কমিশনকে চিঠি দিয়েছিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি স্বয়ং। মূলত তাঁর আর্জিই বিবেচিত হল।
গত ৮ জানুয়ারি দেশের ৫ রাজ্য অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, মণিপুর এবং গোয়ার বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র জানিয়েছিলেন, পঞ্জাবের ১১৭ আসনে, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি এক দফায় ভোটগ্রহণ হবে।তখন অবশ্য ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে আপত্তি জানায়নি রাজ্যের শাসকদল কংগ্রেস। বরং, মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার হঠাৎ অবস্থান বদলে ভোট পিছোনোর দাবি তোলেন তিনি। পরে একই দাবি জানায় বিরোধী বিজেপিও।
আমজনতার ধর্মীয় আবেগের কথা মাথায় রেখেই, শাসক-বিরোধী উভয় পক্ষই ভোট পিছিয়ে দেওয়ার কথা ভাবে। কারণ আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পঞ্জাবের দলিত শিখদের ধর্মগুরু রবিদাসের জন্মজয়ন্তী। সেই উপলক্ষে ১০ ফেব্রুয়ারি থেকেই বেনারসে তীর্থ করতে যাবেন প্রায় ২০ লক্ষ দলিত শিখ। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোট হলে এই ভোটাররা তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। নির্বাচন কমিশনের কাছে চান্নির অনুরোধ ছিল, ভোটগ্রহণ অন্তত ৬ দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক, যাতে এই ২০ লক্ষ ভোটার বেনারস থেকে ফিরে এসেও নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় সায় দেয় বিজেপিও। তার পরই ভোটের নতুন দিন ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন।
প্রসঙ্গত পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি নিজেও এই দলিত শিখ সম্প্রদায়েরই একজন। ফলে নেতা হিসেবে, আগামী নির্বাচন জিতে পঞ্জাবে কংগ্রেসকে ফের ক্ষমতায় আনতে হলে রাজ্যের ৩২ শতাংশ দলিত ভোট একটা বড় ফ্যাক্টর। কারণ, পঞ্জাবের হিন্দু ভোটারদের একটা বড় অংশের ভোট বিজেপি এবং অমরিন্দর সিংয়ের নবগঠিত জোটের দিকে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত। আম আদমি পার্টিও সেখানে কিছুটা ভাগ বসাবে। উচ্চবর্ণের জাঠ শিখদের ভোটের একটা বড় অংশ অকালি দল নিজের দখলে রেখেছে। বাকিটায় কংগ্রেসের পাশাপাশি ভাগ বসাতে তৈরি আপ। তাই ক্ষমতায় ফিরতে কংগ্রেসের প্রধান ভরসা এই ৩২ শতাংশ দলিত শিখদের ভোটই। আবার বিজেপিও চাইছে দলিত শিখদের ভোট নিজেদের দিকে টানতে। তাই রবিদাসের জন্মজয়ন্তীকে সামনে রেখে, স্থানীয় ধর্মীয় আবেগ থেকে নির্বাচনী ফায়দা তুলতে ঝাঁপিয়েছে যুযুধান কংগ্রেস-বিজেপি।
Leave a Reply