বঙ্গভূমি লাইভ ডেস্ক: মণিপুরের ম্যাজিক ফিগার ৩১। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অনেকটাই তার কাছে পৌঁছে গেছে বিজপি (bjp) । উত্তরপূর্বের ছোট্ট রাজ্য মণিপুর (manipur) জাতীয় রাজনীতির নিরিখে নগণ্য মনে হতে পারে। তবে গোটা উত্তরপূর্ব জুড়ে বিজেপির দাপট বজায় রাখার ক্ষেত্রে এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উত্তরপূর্বে কংগ্রেসকে (congress) হটিয়ে ধীরে ধীরে জমি শক্ত করেছে বিজেপি। পাশাপাশি আঞ্চলিক দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নিজের ক্যারিশ্মা চালিয়েছেন। এই আবহে মণিপুরে এবার বিজেপি একা লড়াই করেছে। তাই এই ভোট তাদের কাছে অগ্নিপরীক্ষা। তারা সেই পরীক্ষায় সফল বলা যায়।
ভোটে জিতে এম বীরেন সিং বলেন, ‘আমরা সরকার গঠনের দাবি করার জন্য সময় নেব, পূর্ণ ফলাফল বের হতে দিন। আমাদের জাতীয় নেতারা মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মন্ত্রে মনোনিবেশ করব।’
মণিপুর (মোট আসন ৬০)
দল এগিয়ে/জয়ী
বিজেপি | ৩১ |
কংগ্রেস+ | ৫ |
অন্যান্য | ২৪ |
বিজেপি মণিপুরে (Manipur) এগিয়ে ৩১টি আসনে। এই রাজ্যে ম্যাজিক ফিগার ৩১। কংগ্রেস এই রাজ্যে মাত্র ৫টি আসনে এগিয়ে।
কংগ্রেস যে আসনগুলিতে এগিয়ে- থৌবাল, ওয়াবগাই, ল্যাংথাবল, খঙ্গাবোক, খুন্দ্রাকপাম
বিজেপি (bjp) প্রাথমিক ভাবে যে আসনগুলিতে এগিয়ে – খুরাই, হাররোক, চান্দেল, হেনগাং, ফুঙ্গিয়ার, সাগোলবন্দ, থেঙ্গা, কাংপোকপাই, লিলং, নিম্বোল। জয়ের পর বীরেন সিং বলেন, আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি, যাতে আগামী পাঁচ বছর শান্তি ও উন্নয়নের ধারা বজায় থাকে মণিপুরে। বিজেপি পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করবে।
হেইঁগং কেন্দ্র থেকে প্রথম থেকে এগিয়ে ছিলেন বিজেপির প্রার্থী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এম বীরেন সিং। বেলা গড়াতে ক্রমশ তাঁর মুখের হাসি চওড়া হয়। এক্সিট পোলগুলি বেশিরভাগই ভবিষ্যদ্বাণী করেছি যে বিজেপি মণিপুরে একক বৃহত্তম দল হিসাবে উঠে আসবে। ৬০ আসনের বিধানসভার জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং ৫ মার্চ, দুটি ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসা – ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) এবং নাগা পিপলস ফ্রন্ট (এনপিএফ) – এই নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী।

মণিপুরের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) রাজেশ আগরওয়াল বলেছিলেন যে রাজ্য সরকার জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে অর্থ প্রদান করে এমসিসি লঙ্ঘন করেনি। তাঁর কথায়, যারা অপারেশন স্থগিত ঘোষণা করেছে সেই গোষ্ঠীগুলিকেই অর্থ প্রদান করা হয়েছে। সিইওর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেহেতু এমসিসি নির্বাচনের ঘোষণা এবং প্রয়োগের আগে সুবিধাভোগীদের ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং অনুমোদন করা হয়েছিল, তাই মণিপুর বিধানসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে এমসিসির কোনও লঙ্ঘন হয়নি।
নিষিদ্ধ গোষ্ঠীগুলিকে অর্থ প্রদান নিয়ে বিতর্ক
নির্বাচন কমিশন বলে যে মণিপুরে নিষিদ্ধ গোষ্ঠীগুলিকে অর্থ প্রদান আদর্শ আচরণবিধির (এমসিসি) লঙ্ঘন নয়। এর প্রেক্ষিতে গত ৫ মার্চ কংগ্রেস বলে যে তারা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবে এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে৷ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন যে তিনি কমিশনের আদেশে হতবাক। তাঁর প্রশ্ন, মণিপুর সরকার এবং কেন্দ্রের দ্বারা নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে অর্থপ্রদান এমসিসির লঙ্ঘন নয় কীভাবে এবং অভিযোগ করেছেন যে এটি নির্বাচনকে ‘খুন’ করার সামিল।
আর্মড ফোর্সেস (স্পেশাল পাওয়ার) অ্যাক্ট, ১৯৫৮ (AFSPA) বাতিল করার জন্য উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলিতে জোরালো আন্দোলন শুরু করেছে। নাগাল্যান্ডে সেনার গুলিতে ১৪ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর পর থেকেই এই আন্দোলনের পটভূমি তৈরি হয়েছে এবং এর ফলে উত্তরপূর্বের রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টে গিয়েছে। মণিপুরে বিধানসভা নির্বাচন দুটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে মণিপুর বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। উল্লেখ্য, ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বের দুটি রাজ্য আগামী বছরের শুরুতে বিধানসভা নির্বাচনে যাবে৷
বিভিন্ন বুথ ফেরত সমীক্ষা বেশি নম্বর দিয়েছিল বিজেপিকে। ইন্ডিয়া টুডে মণিপুরে বেশি নম্বর দিয়েছিল বিজেপিকে। তাদের মতে এই রাজ্যে আবারও ক্ষমতায় আসবে বিজেপি। এই সমীক্ষা অনুযায়ী, এখানে বিজেপি পেতে পারে ৩৩ থেকে ৪৩ আসন।
সংবাদ মাধ্যমের হাত ধরে একের পর এক কেন্দ্রে বিজেপির জয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ে। সেইসঙ্গে রাজধানী ইম্ফলের নানা প্রান্তে শুরু হয়ে যায় ঐতিহ্যবাহী মণিপুরী নাচ। বিজেপির কর্মকর্তারা আনন্দে মেতে ওঠেন। চারিদিকে গেরুয়া আবীর উড়তে থাকে। এখন নির্বাচন কমিশনের জয় ঘোষণার পালা। এখনও পর্যন্ত যে ফল সামনে এসেছে, তাতে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীর হাসি চওড়া হতেই পারে। সেইসঙ্গে সামগ্রিকভাবে ৫ রাজ্যের ভোটের ফলে বিজেপির (bjp) রেজাল্ট কার্ড মোদী (modi) শাহদের স্বস্তি দিচ্ছে বলাই যায়। দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে শুরু হচ্ছে উৎসব।
Leave a Reply