প্রিয়ম সেনগুপ্ত: কেউ বলছিলেন তাসের ঘরের ওপরে বুলডোজার চালানোর গল্প, কেউ আবার তুলনা করছিলেন ডেভিড বনাম গোলিয়াথের লড়াইয়ের সঙ্গে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় মনে করা হচ্ছিল, রাশিয়ার সামনে ইউক্রেনের মুখ থুবড়ে পড়াটা কয়েকদিন নয়, কয়েক ঘণ্টার ব্যাপার।যুদ্ধের ২৩ দিন হয়ে গেল। রাশিয়ার সামনে ইউক্রেনের স্রেফ খড়কুটোর মতো উড়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেই রাশিয়া ২৩দিন পরেও যে যুদ্ধ পরিস্থিতির ওপরে খুব একটা কবজা যে করে উঠতে পারেনি, সেটা বলে দেওয়ার জন্য সামরিক বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার হয় না।
রাশিয়া বনাম ইউক্রেনের লড়াইয়ে (Russia-Ukraine War) ভ্লাদিমির পুতিন যদি সর্বশক্তি প্রয়োগ করেন প্রতিবেশী দেশটির ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন, তাহলে সেটা যে মশা মারতে কামান দাগার মতোই বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে, সে বিষয়ে দ্বিমতের কোনও প্রশ্নই ছিল না।কিন্তু কেন, কেন এতদিনেও ইউক্রেনকে পিছমোড়া করে বেঁধে না ফেলা যাক, অন্তত নতজানুটুকুও করা গেল না? এমন তো নয়, রাশিয়ার সামরিক শক্তি ধারেভারে একচুলও পিছিয়ে রয়েছে ইউক্রেনের থেকে। তাহলে কি পুতিন আদৌ যুদ্ধটা জিততেই চাইছেন না? স্রেফ যুদ্ধ যুদ্ধ খেলছেন? ভয় দেখাচ্ছেন ইউক্রেনকে? যুদ্ধনীতির সহজপাঠ বলে শত্রুকে ঘুরে দাঁড়ানোর যত সময় আপনি দেবেন, ততই পরিস্থিতির রাশের ওপর থেকে আপনার মুঠো আলগা হতে বাধ্য। যুদ্ধের বয়স তিন সপ্তাহ হয়ে গেছে।লাখটাকার এই প্রশ্ন একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের কপালে ভাঁজ ফেলছে, অন্যদিকে রাশিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত দেখেশুনে তাঁদের মনে হচ্ছে, বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সের আশপাশে ঘুরঘুর করা তো দূরে থাক, পুতিন নাকি গুটিগুটি পায়ে নিজের গোলের দিকেই এগিয়ে চলেছেন! তাঁদের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত, নিজের জালেই বল জড়িয়ে দেবেন না তো রাশিয়ার সর্বাধিনায়ক (Vladimir Putin)?
মনে হওয়াটা নিতান্ত অমূলক নয়। রাশিয়ার তরফে এমন কিছু ‘ট্যাকটিক্যাল মুভ’ দেখা যাচ্ছে, যা মোটেও তাদের যুদ্ধনীতির সঙ্গে যায় না। রাশিয়ার সামরিক বাজেটের বড় একটি অংশ চলে গেছে পারমাণবিক অস্ত্র (Nuclear weapons)এবং পারমাণবিক গবেষণার পিছনে। এই গবেষণার মধ্যে রয়েছে হাইপারসনিক মিসাইল (যা শব্দের চেয়েও দ্রুত উড়ে গিয়ে আঘাত হানতে পারে নিখুঁত লক্ষ্যে) তৈরির মতো প্রকল্প। এছাড়া রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক সামরিক ট্যাঙ্ক টি-১৪। তবে এ সব অস্ত্রই মস্কোর রেড স্কোয়ারের প্যারেডে দেখা গেলেও ইউক্রেনের যুদ্ধে দেখা যায়নি।কেউ কেউ দাবি করতেই পারেন, পারমাণবিক অস্ত্র হল শেষ হাতিয়ার। নিতান্ত অপারগ না হলে আস্তিন থেকে পারমাণবিক মিসাইলের তাসটি পুতিন বের করবেন না। কিন্তু কস্মিনকালেও কেউ কখনও শুনেছে, হাতে অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক থাকা সত্ত্বেও পুরনো মডেলের টি–৭২ ব্যবহার করা হচ্ছে? হ্যাঁ, ইউক্রেনে হামলা করার জন্য সেখানে রাশিয়া যেসব ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে, তার বেশিরভাগই টি-৭২!
এবার মাটি ছেড়ে একটু আকাশের দিকে তাকানো যাক। রাশিয়ার বায়ুসেনা পৃথিবীতে দ্বিতীয় শক্তিশালী (প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ফৌজ হিসেবে গণ্য করা হয়। সেখানে ইউক্রেনের বায়ুসেনা অনেকটাই পিছিয়ে। মনে করা হয়েছিল, মাটির দিকে তাকাতেই হবে না। আকাশ থেকে বোমা দেগেই রাশিয়া হেলায় ইউক্রেনকে (Russia-Ukraine War) ধুলোয় মিশিয়ে দেবে। কিন্তু কোথায় কী, তিন সপ্তাহ কাটার পরেও ইউক্রেন আকাশে নাগাড়ে টক্কর দিয়ে যাচ্ছে পুতিনের বায়ুসেনার সঙ্গে। শুরুর দিকে যদিও ইউক্রেনের আকাশ রুশ পাইলটরাই শাসন করেছিলেন। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে, ইউক্রেনের বায়ুসেনার পাইলটরাও পাল্টা ‘চিন মিউজিক’ শুনিয়ে দিচ্ছেন।শুধু তাই নয়, রাশিয়ার এত গর্বের বায়ুসেনা কার্যত বেআব্রু হয়ে পড়ছে ছোট্ট ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর সামনে। যুদ্ধের শুরুর দিকে ইউক্রেনের কিয়েভের কাছাকাছি হোস্টোমেল বিমানবন্দরে রাশিয়ার হেলিকপ্টার হামলা ঠেকিয়ে দিয়েছে ইউক্রেট সেনা। যার ফলে স্থলপথে ঢুকে পড়া রুশ সেনার রসদ আর অস্ত্র জোগানে টান পড়েছে। মানে, ব্যাপারটা অনেকটা এরকম— লিওনেল মেসি জোর গতিতে স্প্রিন্ট টেনে ডিবক্সের সামনে চলে গিয়ে দেখলেন অ্যাঞ্জেল দি’মারিয়া পায়ে বল নিয়ে মিডফিল্ডেই আটকা পড়ে আছেন। কিন্তু রণক্ষেত্র তো আর ফুটবল মাঠ নয় যে পায়ে বল না থাকলেও বিপক্ষের ডিফেন্ডার হানাদার ফরওয়ার্ডকে স্রেফ ‘গার্ড’ কিংবা ‘ব্লক’ করে রেখে দেবেন। এখানে পায়ে বল (পড়ুন হাতে অস্ত্র) না থাকলে বিপক্ষের সেনা স্রেফ ছিঁড়ে খেয়ে নেবে।হচ্ছেও তাই। রাশিয়ার গগনচুম্বী সামরিক আস্ফালনের পক্ষে রক্তাক্ত রুশ সেনাদের ছবি মোটেও ভাল বিজ্ঞাপন নয়।
অস্ত্র এবং রসদের জোগান বন্ধ হওয়ায় যেটা আরও বড় অসুবিধা হচ্ছে, বায়ুসেনা এঁটে উঠতে না পারায় পুতিনের বাহিনীকে (Russian Army) সড়ক পথের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। যে সড়ক ইউক্রেনের সেনাদের হাতের তালুর মতো চেনা। কোথায় কোন বাঁক, কোথায় কোন গুপ্ত সুড়ঙ্গ— এসবই তাদের নখদর্পণে। তাই গেরিলা পদ্ধতিতে রুশ বাহিনীর ওপরে ইউক্রেট সেনা(Russia-Ukraine War) অতর্কিতে হামলা করে সরে পড়ছে। তিতিবিরক্ত হয়ে রাশিয়া অবশ্য নীতি নিয়েছিল মূল সড়ক থেকে সরে তারা একটু ঘুরপথে হামলা চালাবে। কিন্তু সে সব রাস্তার বেশির ভাগই অতিভারী যান চলাচলের অনুপযুক্ত। কাদায় আটকে গিয়ে রুশ বাহিনীর গাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসার মতো ঘটনাও ঘটছে। হামলা শুরুর আগে বেলারুশে হাড় কাঁপানো শীত এবং বরফের মধ্যে রাশিয়ার সেনাদের বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল। তখন তাদের বোঝানো হয়েছিল, যুদ্ধ হবে স্রেফ নাম কা ওয়াস্তে। তোমরা ইউক্রেনের মাটিতে পা রাখবে, দু’চার দিন গোলাগুলি ছুড়বে, জয় পকেটে পুরে দেশে ফিরে ভদকার গ্লাসে চুমুক দেবে। বাস্তবে যখন ২৩টা দিন কাটার পরেও ইউক্রেন চোখে চোখ রেখে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, তখন রুশ সেনাবাহিনীর পক্ষে সেটা খুব সন্তোষজনক ব্যাপার হওয়ার কথা নয়।
এ কথা এতদিনে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট, ইউক্রেনের পাঁচ আঙুলের জোর মাপতে ভুল করেছিল রাশিয়া। যদি তাদের অঙ্কে ভুল না হতো, তাহলে নতুন করে নতুন করে সৈন্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত পুতিনকে নিতে হতো না। তাও আবার কোথা থেকে আসছে সেই সৈন্য? রাশিয়ার পশ্চিমদিকে থাকা ইউক্রেনে লড়ার জন্য ইতিমধ্যেই সৈন্যের তলব পড়েছে রাশিয়ার পূর্বাঞ্চল ও আর্মেনিয়া থেকে! রাশিয়ার পূর্বাঞ্চল থেকে ইউক্রেনের দূরত্ব কত?না, প্রায় দশ হাজার কিলোমিটার! মানে কলকাতা থেকে দিল্লির দূরত্বের প্রায় সাড়ে ছ’গুণ!দশ হাজার কিলোমিটার সফর করে রুশ সেনা গিয়ে ইউক্রেনে লড়বে! দীর্ঘ পথশ্রমের ধকলের কথা মাথায় রেখেও এই সিদ্ধান্ত যখন রুশ প্রশাসন নিচ্ছে, তখন বুঝতে হবে, ডাল মে কুছ কালা বললে সেটা কমই বলা হবে। আসলে ‘পুরা ডাল হি কালা হ্যায়।’
যুদ্ধনীতির অরণ্যে প্রাচীন প্রবাদ হল, রণকৌশলের তালিকার একদম ওপরে যারা সেনাকে রসদ ও অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার কথা লিখে রাখে, যুদ্ধ তারাই জেতে। রাশিয়া যেখানে ইউক্রেনের(Russia-Ukraine War) দক্ষিণ প্রান্ত ছাড়া আর কোথাও নিজেদের প্রত্যাশার ধারে কাছেও পৌঁছতে পারছে না, সেখানে আমেরিকার কাছ থেকে একের পর এক অত্যাধুনিক অস্ত্র উপহার পাচ্ছে ইউক্রেন। যার মধ্যে মুখে মুখে ঘুরছে মার্কিন প্রযুক্তিতে তৈরি ‘কামিকাজি ড্রোন’–এর কথা। স্কুলব্যাগের মাপের এই ড্রোন পিঠে করেই ঘুরে বেড়ানো যায়। শোনা যাচ্ছে, এই ড্রোন নাকি একের পর এক রুশ ট্যাঙ্ক উড়িয়ে দিতে দারুণ কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে। এদিকে, বিবিসি–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ন্যাটোর এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, রাশিয়া এখনও তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না।
তবে সবকিছুর ওপরে ক্রমেই চওড়া হয়ে উঠছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির (Volodymyr Zelensky)ছায়া। যুদ্ধের প্রথম দিন থেকে একবারের জন্যও সামান্যতম নমনীয় হননি তিনি। মুখে শান্তির আবেদন রাখলেও বরাবারই শুনিয়ে রেখেছেন, শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে তিনি মাতৃভূমির রক্ষার জন্য লড়বেন। চাইলে বিদেশে চলে গিয়ে নিজের প্রাণ বাঁচাতে পারতেন। সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। নিজে যুদ্ধক্ষেত্রে নেমে সেনাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বার্তা দিয়েছেন, তিনি আর পাঁচজন রাজনীতিকের মতো বিপদের দিনেও ঠান্ডা কাচের ঘরে বসে থাকার বান্দা নন। পরিস্থিতি এমনই, তাঁর জন্য হাসতে হাসতে প্রাণ দেবেন না, এমন সৈনিক বোধহয় ইউক্রেনের ফৌজে একজনও নেই। গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে জেলেনস্কি শুনিয়ে রেখেছেন, ‘যুদ্ধ হলে রাশিয়া এমন ক্ষতির মুখে পড়বে, যে আগামী সাত প্রজন্মও সেই ক্ষতির ধাক্কা সামলে উঠতে পারবে না। ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কমানোর একটাই উপায়— আমার সঙ্গে আলোচনায় বসুক রাশিয়া।’ভাবা যায়! এ যেন ব্যাট হাতে লগবগ করতে থাকা আশিস নেহেরা ব্যাট উঁচিয়ে শোয়েব আখতারকে বলছেন, ‘ওহে, বাউন্সার বৃষ্টি বন্ধ করো। নইলে এমন মার মারব যে বলের চামড়া উঠে যাবে।’
কত ঘণ্টায় ইউক্রেনের পতন ঘটবে, তা নিয়ে যখন আপামর বিশ্ববাসী রসিকতা করেছে, তখন ২৩ দিন রুশ সেনাকে রুখে দিয়ে সবাইকে চমকে দেওয়া জেলেনস্কির মুখেই এই আত্মবিশ্বাস মানায়।জেলেনস্কির এই আত্মবিশ্বাস স্রেফ কথার কথা নয়। নইলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তাইপ এরদোয়ানের সহকারী ইব্রাহিম কালিন বিবিসিকে এক বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার দিয়ে বসতেন না। যে সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, এরদোয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের। সেখানে যুদ্ধ থামিয়ে শান্তি আলোচনার জন্য বেশ কয়েকটি শর্ত রেখেছেন পুতিন। কী এই শর্ত? ইব্রাহিম জানাচ্ছেন, শর্তগুলোকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। এবং তার মধ্যে প্রথম চারটে শর্ত মেনে নেওয়া নাকি জেলেনস্কির ইউক্রেনের পক্ষে মোটেও সমস্যার হবে না। পুতিনের তরফ থেকে দেওয়া প্রধান শর্ত হল, ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না এবং তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। জেলেনস্কি তো ইতিমধ্যেই জানিয়ে রেখেছেন, এই শর্তে তাঁর আপত্তি নেই। পাশাপাশি, ইব্রাহিম আরও জানিয়েছেন, পুতিন নাকি বলেছেন, কোনও সিদ্ধান্তে আসার আগে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মুখোমুখি বসতে চান। জেলেনস্কি তো সেই কবে থেকেই আলোচনার টেবিলে বসতে প্রস্তুত। তাহলে কি...
নাহ, জেলেনস্কির দেশের বাতাসে এখনও বারুদের গন্ধ এতই তীব্র, পথে পথে এখনও এত বুলেটের খোল পড়ে যে, এই মুহূর্তে শান্তি বৈঠক হয়ে সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে, এমন আশা কেউই করছেন না। তবে এটুকু কি বলা চলে যে, ইউক্রেনের আকাশে সাদা পায়রা ওড়ার প্রত্যাশিত প্রেক্ষাপটটা একটু একটু করে হলেও তৈরি হচ্ছে? যুদ্ধবিরোধী যে কোনও সুস্থ–স্বাভাবিক মানুষই চাইবেন, রক্তক্ষয় বন্ধ হোক। রুশ ট্যাঙ্কের মুখ ঘুরে গিয়ে চাকা গড়াতে থাকুক মস্কোর দিকে। তার জন্য দরকার দ্রুত, অতি দ্রুত পুতিন এবং জেলেনস্কির আলোচনায় বসা। আজ না হোক কাল, পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে, তাতে আলোচনায় বসতে হতেই পারে পুতিন–জেলেনস্কিকে। মহাশক্তিধর হয়েও সেই বৈঠকে দুঁদে রাজনীতিক পুতিনের মাথা সামান্য হলেও নোয়ানো থাকবে। উল্টোদিকে ইউক্রেনের সারা শরীর রক্তাক্ত হলেও তাঁর মেরুদণ্ড থাকবে সটান, ঋজু। কারণ, এই ২৩দিনে একবারের জন্যও নতজানু করা যায়নি তাঁকে। গোলাগুলি ছুড়ে হয়তো তাঁকে খানিক রক্তাক্ত করা গেছে, কিন্তু বরাবরই তিনি লড়ে গিয়েছেন মাথা উঁচু করে। দেখেশুনে মনে হতেই পারে, জেলেনস্কির নোটবুকে যুদ্ধজয়ের মন্ত্র হিসেবে লেখা রয়েছে, ‘দম রাখো, খেলা ঘুরবে।’ সেই দম কিন্তু জেলেনস্কি বরাবর ধরে রেখে গিয়েছেন।শান্তিবৈঠক যদি হয়, সেই বৈঠকে পুতিনের উল্টোদিকের চেয়ারে বসার আগে রাজনৈতিক দরকষাকষির পর্বটা ভলোদিমির জেলেনস্কি শুরু করতেই পারেন রাজার প্রতি রাজার মতো ব্যবহার চেয়ে!সেটাই হবে মহাশক্তিধর পুতিনের হার, আর সেখানেই ‘পুঁচকে’ ইউক্রেনের জয়।
Leave a Reply